ইতিমধ্যে বহু ভাষায় অনূদিত হওয়া রিচার্ড ডকিন্সের ‘দ্য গড ডিল্যুশন’ (১) বইটির এটি প্রথম বাংলা অনুবাদ প্রচেষ্টা। নিজস্ব ব্লগের জন্য বইটির অনুবাদটি শুরু করেছিলাম ২০০৯ এর কোন এক সময় ও পরে ধারাবাহিকভাবে ২০১১ সাল থেকে। যারা আমার ব্লগে (জীবনের বিজ্ঞান) এসেছেন, তারা ইতিমধ্যেই অনুবাদটির সাথে কিছুটা পরিচিত, এই বইটি সেই ধারাবাহিক অনুবাদের পূর্ণাঙ্গ সম্পাদিত রুপ। মূলত এটি একজন পাঠকের অনুবাদ, যার সূচনা হয়েছিল বেশ কয়েক বছর আগেই।আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ রিচার্ড ডকিন্সের প্রতি বইটি বাংলা অনুবাদ করতে আমাকে সদয় অনুমতি দেবার জন্য।
আমি পাঠকদের আমন্ত্রণ জানাই এই গুরুত্বপূর্ণ বইটি পাঠ করার জন্য; আমি নিশ্চিৎ যে, অস্তিত্বের একটি কেন্দ্রীয় প্রশ্ন নিয়ে রিচার্ড ডকিন্সের যুক্তি, তর্ক আর আলোচনা অবশ্যই পাঠকের মনে কৌতুহলের জন্ম দেবে, সুযোগ করে দেবে আরো বেশী প্রশ্ন করার। পেশাগত ব্যস্ততা আর সম্পাদনা করার সময়ের সমন্বয়ের প্রায় সার্বক্ষণিক প্রচেষ্টা অনুবাদে বহু অনাকাঙ্খিত ভ্রান্তির কারণ হতে পারে, আমি পাঠকদের ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আশা করছি ক্রটিগুলো সংশোধন করার সুযোগ দেবার মত দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ হবার সম্ভাবনাটা বাস্তব রুপ পাবে। এই বইটি আমি আমার একটি সামান্য প্রচেষ্টা হিসাবে উৎসর্গ করছি বাংলাদেশে মুক্ত চিন্তার প্রসারে নিরন্তর সংগ্রাম করে যাওয়া সেই সব মানুষগুলোকে, যারা বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনার স্তরে দ্বিধাদ্বন্দ্বহীন, নির্ভীক, কৌতুহলী মনগুলোকে পথ দেখিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বিশ্বব্যাপী মুক্তমনাদের সম্মিলিত উদ্যোগে একটি মানবিক সমাজ নির্মাণের লক্ষ্যে।
কাজী মাহবুব হাসান
ক্লিনটন রিচার্ড ডকিন্স সুপরিচিত রিচার্ড ডকিন্স নামেই। তাঁর প্রশিক্ষণ আর পেশাগত ক্ষেত্র প্রাণিবিজ্ঞান, বিশেষ করে ইথোলজী (প্রাণিবিজ্ঞানের যে শাখায় বিজ্ঞানীরা বৈজ্ঞানিক ও নৈর্ব্যাক্তিকভাবে প্রাণীদের আচরণ নিয়ে গবেষণা করে থাকেন) এবং বিবর্তন জীববিজ্ঞান। ব্রিটিশ সরকারের কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা বাবার কাজের সুবাদে তাঁর জন্ম এবং শৈশব কাটে আফ্রিকায়। বাবা এবং মা, দুজনেরই আগ্রহ ছিল প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে, আর পারিবারিক সেই আগ্রহটিও সঞ্চারিত হয়েছিল শিশু ডকিন্সের মনে। জীবজগতের দৃশ্যমান নানা রুপ আর বৈচিত্র্যময়তার একটি বিকল্প ব্যাখ্যা হিসাবে মধ্য কৈশোরেই চার্লস ডারউইনের প্রস্তাবিত বিবর্তন তত্ত্বটি তাঁকে প্রবলভাবে প্রভাবিত করেছিল; উচ্চশিক্ষার বিষয় হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন জীববিজ্ঞান। অক্সফোর্ডের ব্যালিওল কলেজে প্রাণিবিজ্ঞানে ১৯৬২ সালে স্নাতক এবং বিশ্বসেরা ইথোলজিষ্ট ও জীববিজ্ঞানী নিকোলাস টিনবার্গেন (১) এর তত্ত্বাবধানে তিনি পিএইচডি শেষ করেন ১৯৬৬ সালে।
অনুবাদক:
কাজী মাহবুব হাসান
পেশাগত প্রশিক্ষণের ক্ষেত্র চিকিৎসা বিজ্ঞান, চিকিৎসা অণুজীববিজ্ঞান, রোগতত্ত্ব ও জনস্বাস্থ্য। অনুবাদক, আগ্রহের ক্ষেত্র জীববিজ্ঞান, বিজ্ঞানের ও শিল্পকলার ইতিহাস, সভ্যতার বিকাশে বিজ্ঞান ও শিল্পকলার মিথস্ক্রিয়া। ব্যক্তিগত ব্লগ, ‘জীবনের বিজ্ঞান’। প্রকাশিত কিছু অনুবাদ: দ্য গড ডিল্যুশন (অনার্য), ওয়েজ অব সিইং (অনার্য), দর্শনের সহজ পাঠ (দিব্য প্রকাশ), সভ্যতা: একটি ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি (দিব্য প্রকাশ), দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ (দিব্য প্রকাশ)।