অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর (7 আগস্ট 5 ডিসেম্বর 1951 1871-) এক জন খ্যাতিমান ভারতীয় চিত্রশিল্পী, নন্দনতাত্বিক এবং লেখক. অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের প্রপৌত্র এবং মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের তৃতীয় ভ্রাতা গিরীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৌত্র ও গুণেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কনিষ্ঠ পুত্র. সে দিক থেকে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর পিতৃব্য ছিলেন.
জীবনপঞ্জি
পিতামহ ও পিতা ছিলেন অ্যাকাডেমিক নিয়মের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রজন্মের শিল্পী. এ সুবাদে শৈশবেই চিত্রকলার আবহে বেড় ১৮৮১ থেকে ৮৯ পর্যন্ত সংস্কৃত কলেজে ন ১৮৮৯ সালেই সুহাসিনী দেবীর সাথে পযিণ 1890 এ গড়া রবীন্দ্রনাথের খামখেয়ালি সভার সদস্য হয়ে তিনি কবিতা পড়েছেন, নাটক করেছেন. 1896 সালে কলকাতা আর্ট স্কুলের সহকারী অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন. ভারতীয়দের মধ্যে তিনিই প্রথম এই মর্ 1911 সালে রাজা পঞ্চম জর্জ ও রানি মেরি ভারত ভ্রমণে এলে আর্ট গ্যলারি পরিদর্শনের সময় তাঁদের ওরিয়েন্টাল আর্ট সম্পর্কে বোঝাবার দায়িত্ব পান. 1913 সালে লন্ডনে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিত্রপ্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়, এবং তিনি ইংরেজ সরকারের কাছ থেকে সি আই ই উপাধি লাভ করেন. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ডি-লিট প্রদান করে 19২1 সালে. 1941 থেকে 45 পর্যন্ত শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীর আচার্য রূপে দায়িত্ব পালন করেন.
চিত্রসাধনা
অবনীন্দ্রনাথের চিত্রকলার পাঠ শরু হয় তৎকালীন আর্ট স্কুলের শিক্ষক ইতালীয় শিল্পী গিলার্ডির কাছে. তাঁর কাছে অবন শেখেন ড্রয়িং, প্যাধটট পরবর্তীতে ইংরেজ শিল্পী সি এল পামারের কাছে লাইফ স্টাডি, তেল রঙ ইত্যাদী শিক্ষা অর্জন করেন. ভারতীয় রীতিতে তাঁর আঁকা প্রথম চিত্রাবলি 'কৃষ্ণলীলা-সংক্রান্ত'. এই রীতি অনুসারী চিত্রশিল্পের তিনি 1895 সালের দিকে অবনীন্দ্রনাথ প্রথম নিরীক্ষা শুরু করেন. 1897 সালে আঁকলেন 'শুক্লাভিসার'- রাধার ছবি মাঝে রেখে উৎকীর্ন কবি গোবিন্দ দাসের পংক্তিমালা. যা ছিল পাশ্চাত্য নিয়মের সাথে ভারতীয় রীতির নবতর সংশ্লেষণ, যোজন বিয়োজন. 1900 সালে কলকাতা আর্ট স্কুলে কৃষ্ণলীলা সিরিজ প্রদর্শিত হয়েছিল. পরবর্তীকালে ই বি হ্যাভেলের উদ্যোগে লর্ড কার্জনের দিল্লি দরবারে আরও দু'টি প্রদর্শনী এবং লন্ডনের 'স্টুডিও'পত্রিকায় চিত্রালোচনা প্রকাশিত হলে অবনীন্দ্রনাথের ছবি শিল্পরসিকদের মাঝে আগ্রহের জন্ম দেয়. তাঁর 'শাজাহানের অন্তিমকাল'মোঘল মিনিয়েচারের এক লোকায়ত নিরীক্ষা, যেখানে শাজাহানের অন্তিম সারবত্তা করুন রসের. ক্রমান্বয়ে আঁকলেন 'বুদ্ধ ও সুজাতা'(1901), কালীদাসের ঋতুসংহার বিষয়ক চিত্রকলা (1901), 'চতুর্ভূজা ভারতমাতা'1905 'কচ দেবযানী'(1906), 'শেষযাত্রা'(1914). জাপানি প্রভাবে অবনীন্দ্রনাথ অঙ্কন করেন তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ 'ওমর খৈয়াম'(1930) চিত্রাবলি. চিত্রসাধনের শেষ পর্যায়ে অবনীন্দ্রনাথের শিল্পচিন্তা নতুন মাত্রা লাভ করে. গড়ে তোলেন 'কুটুম কাটাম'- আকার নিষ্ঠ এক বিমূর্ত রূপসৃষ্টি.
সাহিত্যসাধনা
প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা আনুমানিଦাস গল্প কবিতা চিঠিপত্র শিল্প আলোচনা যাত্রাপালা পুথি স্মৃতিকথা সব মিলিয়ে প্রকাশিত রচনা সংখ্যা প্রায় তিনশ সত্তরটি. পিত্রব্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনুপ্রেরণায় লেখালেখির সূত্রপাত. 'বাল্য গ্রন্থাবলী'র প্রথম ও তৃতীয় বই অবনীন্দ্রনাথের শকুন্তলা ও ক্ষীরেরপুতুল. অবনীন্দ্রনাথের প্রথম প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল 'নবযুগ'পত্রে 1311 শ্রাবনে,'নবদুর্ব্বা 'নামে. রানি বাগেশ্বরী অধ্যাপক থাকার সময় 19২1-19২9 সালের মধ্যে যে ঊনত্রিশটি বক্তৃতা দিয়েছিলেন সেগুলি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় 1941 সালে 'বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী'নামে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়.বাংলা ভাষায় লিখিত ভারতীয় নন্দন তত্বের একটি আকর গ্রন্থ হিসাবে যা বিবেচিত হয়. চিত্রকলায় ধারাবাহিকতায় লেখালেখির জগতেও আপন ঐতিহ্যের অনুরাগী ছিলেন অবনীন্দ্রনাথ. তিনি বেশ কিছু যাত্রাপালা ও পুথি রচনা যার মধ্যে অরণ্যকান্ত পালা, কঞ্জুশের পালা, কাক ও পানির পালা, ঋষিযাত্রা, মারুতির পুথি, চাইবুড়োর পুথি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য.
সূত্র: উইকিপিডিয়া