আল্লাহ্ তায়ালা বলেন ‘হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ছুটে যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ করো।এটা তোমাদের জন্যে উত্তম, যদি তোমরা বুঝো। (সুরা জুমআ -9)।
মহানবী (সা.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের পর কুবার মসজিদে প্রথম জুমার নামাজ আদায় করেন। এতে রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজে ই ইমামতি করেন। এদিন জুমার নামাজের আগে তিনি দুটি খুতবা প্রদান করেন। তখন থেকেই শুক্রবারে জুমার নামাজের জামাতের আগে দুটি খুতবা প্রদানের প্রথা প্রচলিত।রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রথমত একটি খেজুরগাছের খুঁটির সঙ্গে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে দিতেন।এরপর রাসুলের পরামর্শ নিয়ে সাহাবিরা মিম্বার তৈরি করলে তিনি ওপর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দিতেন দিতেন। ওই মিম্বারে তিনটি তাক ছিল। নবীজি (সা.) তৃতীয় তাকে দাঁড়াতেন ও বসতেন। নবীজি (সা.) - এর ওফাতের পর হজরত আবু বকর (রা.) - এর খিলাফতের সময় তিনি দ্বিতীয় তাকে দাঁড়াতেন। হজরত ওমর (রা.) - এর খিলাফতের সময় তিনি তৃতীয় তাকে দাঁড়াতেন। অতঃপর হজরত উসমান (রা.) - এর খিলাফতের সময় তিনি দ্বিতীয় তাকে দাঁড়াতেন এবং এ বর্তমানে বর্তমানে শাব্দিক অর্থ বক্তৃতা বা বক্তৃতা করা। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় খুতবা বলা হয় এমন বক্তৃতা, যাতে মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা, তাঁর একত্ববাদের ঘোষণা, রাসূলুল্লাহ (সা.) এর প্রতি দরুদ এবং উপস্থিত সাধারণের প্রতি উপদেশ বিদ্যমান থাকে। নবী (সা.) জুমার নামাজের আগে ‘খুতবা’ বা বয়ান-বক্তৃতায় বিভিন্ন উপদেশমূলক কথা বলতেন। আত্মগঠনের কথা বলতেন। সাহাবাদের ঈমান ও
ব্যাপারে সতর্ক করতেন।ইসলামে জুমার খুতবা ও বয়ানের তাৎপর্য সীমাহীন।একটি ঘুণে ধরা সমাজকে জাগাতে, মুসলিম উম্মাহ ও ইসলামী সমাজে ঈমানের আলো জিইয়ে রাখতে জুমার বয়ান ১৪০০ বছর ধরে রেখে আসছে। কথা বলেন সমাজে প্রচলিত অন্যায়-অবিচার, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, হত্যাকাণ্ড ইত্যাদির বিরুদ্ধে। জুমার দিনে সবচেয়ে বেশি মানুষের সমাগম ও জমায়েত হতো।রাসুল সা এই সুযোগটাকে তিনি কাজে আল্লাহর বানী প্রচারের জন্য।তাই তিনি সমকালীন প্রক্ষাপটের উপর বয়ান করতেন। কিন্তু বর্তমানে আমাদের সমাজে জুমার দিন খুতবার সময়টাকে গুরুত্ব দেয়া হয়না।তাছাড়া সমাজের মসজিদ অবহেলিত।যোগ্য ও উচ্চ শিক্ষিত ইমামের চেয়ে সস্তা ও ইমাম খোঁজা হয়।আর কম শিক্ষিত ইমাম হওয়ার কারণে খুতবার বিষয় বস্তুগুলোকে সংগ্রহ, সজ্জিত ও উপস্থাপন করতে পারে না বলে যথাযুক্ত খুতবা পেশ করা হয় না।এই কথা মাথায় রেখে সম্মানিত খতিবগণের হাতে সসজ্জিত একটি বই রচনা করার মতো মহৎ উদ্যোগ নেন সুপরিচিত ব্যাক্তি ড.খোন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর। তিনি কুরআন ও সুন্নাহের আলোকে জীবন সমাজমুখী খুতবা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সামনে উপস্থাপন করার লক্ষ্যে এবং সমকালীন প্রেক্ষাপটের উপর নজর খুতবাতুল খুতবাতুল ইসলাম বইটি রচনা করেছেন।বইটির অন্তর্গঠন কতটা হতে পারে সেটি সূচিপত্রে চোখ বুলালেই বুঝা যাবে।আরবী মাসের মাসের জন্য প্রত্যক মাসেই ৪ টি করে বয়ান রয়েছে।যা ওই মাসের সাথে সম্পৃক্ত।দু ঈদের খুতবা এবং বিবাহের খুতবাও লিপিত। তবে এ বইটির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে, যা অন্য সকল বই থেকে আলাদা করে তুলেছে। হলো এখানে ইংরেজি ১২ মাসের যে ও আন্তর্জাতিক আন্তর্জাতিক রয়েছে সেগুলোর উপরেও আলোকপাত দিয়েছেন।বাংলা ভাষী মানুষ যেহেতু আরবী বুঝে না, তাই আরবি খুতবাগুলো সংক্ষেপে রাখা হয়েছে এবং বড় অক্ষরে ছাপা হয়েছে।খুতবায় কুরআনের আয়াত হাদিস আরবি-বাংলাসহ যথেষ্ট পরিমানে উল্লেখ করা হয়েছে । এককথায় বলতে গেলে “খুতবাতুল ইসলাম” বইটি অন্যসব খুতবার বইগুলো থেকে সব দিক দিয়েই মানসম্মত।
Azken eguneratzea
2023(e)ko abu. 20(a)