দজলা ও ফোরাত নদীর নিম্ন অববাহিকা অঞ্চলে প্রাচীন চ্যালডিস্ জাতির মধ্যে উর নামক স্থানে হজরত ইব্রাহীমের জন্ম। এই অঞ্চল মানব সভ্যতার একটি প্রাচ৲মাথলংন ভ এখানে চন্দ্র-সূর্য ইত্যাদি নৈসর্গিক বৈচিত্র্যের পূজা প্রচলিত ছিল এবং ঐগুলি প্রতীক রূপ লইয়া মূর্তি আকারে তাহাদের পূজা মন্দিরে দেব-দেবীরূপে স্থান লাভ করিয়াছিল। পারস্য উপসাগর হইতে অনুমান ১০০ মাইল দূরে হজরত ইব্রাহীমের জন্মস্থান।
বাল্যকাল হইতে তিনি মূর্তিপূজার বিরোধী ছিলেন এবং যুক্তি দ্বারা তাঁহার মত প্রতিষ্ঠার প্রয়াস পাইয়াছিলেন (৬ ঃ৭৪-৮২)। তখনও তিনি যুবক মাত্র যখন তিনি মূর্তি ভাঙিয়া ফেলিয়াছিলেন (২১ ঃ ৬০)।।। তাঁহার জীবনে এর পরবর্তী স্তর হইল সমাজদ্রোহীরূপে তিনি অত্যাচারিত। তারপর হয়ত কয়েক বৎসর অতিবাহিত হওয়ার পর তাঁহাকে আগুনে ফেলিয়া দেওয়ার ঘটনা ঘটে (২১ ঃ৬৮-৬৯)। কথিত আছে তখন নমরুদ ছিল দেশের রাজা। পরবর্তীকালের অ্যাসিরিয়া রাজ্যের রাজধানী হইয়াছিল প্রসিদ্ধ নাইনাভ শহর। এর নিকটেই যদি নমরুদের রাজধানী হইয়া থাকে তাহা হইলে ধরা যাইতে পারে নমরুদের শাসন সমগ্র মেসোপটেমিয়ায় বিস্তৃত ছিল অথবা ইব্রাহীম আলায়হেস্সালাম ব্যাবিলোনিয়া হইয়া অ্যাসিরিয়া গমন করিয়াছিলেন। হজরত ইব্রাহীমের (আঃ) তৌহিদবাদী কার্যকলাপ হইতে তাঁহাকে নিরস্ত করার জন্য তাহারা অনেক প্রকার ব্যবস্থা অবলম্বন করিয়াছিল (২১ ঃ ৭০), কিন্তু আল্লাহ তাঁহাকে বাঁচাইয়া দিলেন।। পিতার সঙ্গে যখন তিনি পূর্ণ অধিকারের ভাব লইয়া উপদেশ বাক্য উচ্চারণ করিলেন তখন সম্ভবতঃ তিনি পূর্ণবয়স্ক মানুষ (১৯ ঃ ৪১-৪৮)। এরপর তিনি সত্যের খাতিরে চিরতরে মাতৃভূমি ত্যাগ করিয়া সিরিয়া দেশে গমন করেন এবং সেখান হইতে দক্ষিণ দিকে কেনান অঞ্চলে অর্থাৎ ফিলিস্তিনে গমন করেন করেন এবং সেই অঞ্চলকে কেন্দ্র করিয়া দীন প্রচার করিতে থাকেন।।।। সত্যের জন্য দেশ ও আত্মীয়জনের আত্মীয়জনের মায়া মায়া ইহা তাঁহার ত্যাগ।।।।।।।।।।।।। সিরিয়া অথবা কেনান দেশে অবস্থানকালে তিনি সৎপুত্র লাভের প্রার্থনা করেন। এই প্রার্থনার ফলে যে সন্তান লাভ করনন করিল “সমিউন” অর্থ শ্রবণ করা। প্রার্থনা শ্রবণ করার ফলে যে ইসমাইলের জন্ম তাহা ইসমাইল নামের উচ্চারণ হইতেও অনুমান করা যায়। মূল শব্দ ‘সামিয়া’ শ্রবণ করা হইতে ইাাই ইসমই হজরত ইব্রাহীমের বয়স তখন ৮৬ বৎসর। ইসমাইল (আঃ) বড় হইলে পর তাঁহার কোরবানী সংক্রান্ত ঘটনা ঘটে। এরপর কেনানে অবস্থানকালের প্রধান ঘটনার মধ্যে ফেরেশতার মানব আকারে আগমন। মাংসের কাবাব তাহাদের আহারের জন্যধনযইশ তাহারা ফেরেশতা সুতরাং আহার করিলেন ন ন তাহারা জানাইয়া দিলেন যে লুত সম্প্রদায়ের শাস্তির জন্য তাহারা প্রেরিত হইয়াছেন এবং আরও জানাইয়া দিলেন যে পুত্র ইসহাক ও তৎপুত্র ইয়াকুব নবী তাঁহার ঘরে জন্মগ্রহণ করিবেন। তিনি লুত আলায়হেসসালামের কাওমের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন কিন্তু আল্লাহর শাস্তি নির্ধারিত হইয়া যাওয়ার কারণে প্রার্থনা না-মঞ্জুর হইল। লুত সম্প্রদায় ধ্বংসপ্রাপ্ত হইধ)৬
সম্ভবতঃ এই ঘটনার কিছুকাল পরে তাঁহার কাবা নির্মাণ কার্য এবং তাঁহার প্রার্থনা (২ ঃ১২৪-১২৯), (১৪ ঃ৩৫-৪১)। তাঁহার এই প্রার্থনা ও সৎকর্মের ফলস্বরূপ কাবাকে আল্লাহ বিশ্ব মোসলেমের ক্বেবলায় পরিণত করেন এবং সেখানে তাঁহারই বংশধর হইতে বিশ্ব-বরেণ্য রসুলাল্লাহকে (আঃ) প্রেরণ করেন।। বাইবেলে উল্লিখিত মিশর দেশে ভ্রমণের উল্লেখ কোরানুল করিমে নাই।