অতীন্দ্রিয় জগতের আহ্বান ( প্রথম খণ্ড )

· Jay Ma Tara Publishers
4,4
12 ressenyes
Llibre electrònic
135
Pàgines

Sobre aquest llibre

এই অনাদি অনন্ত মহাবিশ্ব পরমাত্মার দিব্যরূপের পরম প্রকাশ। পরমাত্মার এই রূপমাধুরীর এক ভাগ ব্যক্ত এবং তিন ভাগ অব্যক্ত। এই একটি ভাগ হ’ল ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য লোকিক জগৎ যার মধ্যে আবদ্ধ থাকে সাধারণ জীবসকল। মানবদেহের চক্ষু-কর্ণ-নাসিকা-জিহ্বা-ত্বকযুক্ত পঞ্চেন্দ্রিয়ের দৃষ্টিগ্রাহ্য তথা যুক্তিগ্রাহ্য বাস্তব জীবনের এই সীমায়িত গণ্ডীর মধ্যেই তারা জন্ম নেয়, বৃদ্ধি পায়, জরাগ্রস্ত হয় এবং একদিন ঝরে যায় মৃত্যুর কোলে। এই গতানুগতিক জগতে নেই কোন অমৃতের স্বাদ। সেই স্বাদ একমাত্র দিতে পারে পরমাত্মার সেই অনন্ত রূপমাধুরীর অপর অব্যক্ত ভাগ – মন, বুদ্ধি, কর্ম, চিন্তা, ভাবনার অতীত তথা ইন্দ্রিয়াতীত মহাজীবনের অপরিসীম অধ্যাত্ম ঐতিহ্যমণ্ডিত অতীন্দ্রিয় জগৎ। এই দেহাতীত, মনাতীত, ভাবাতীত এবং কালাতীত জগতের মধ্যেই র’য়েছে অনন্ত আনন্দ ও অমৃতের শাশ্বত মহাসম্পদ। 

এই অতীন্দ্রিয় জগৎই হ’ল আমাদের প্রত্যেকের চিরন্তন নিবাস। ওখানেই পরমাত্মার অংশ থেকে আমাদের জন্ম হ’য়েছে এবং আমাদের প্রত্যেকের জীবাত্মাকে ওখান থেকেই পরমাত্মা পৃথিবীর মরলোকে পাঠিয়েছেন সাধনার মাধ্যমে পার্থিব বন্ধন অতিক্রম করে তাঁকে ফিরে পাওয়ার জন্য। প্রতিটি জীবাত্মার জন্যই পরমাত্মা নির্দিষ্ট ক’রে দিয়েছেন তিনটি করে দেহ – স্থুলদেহ, সূক্ষ্মদেহ এবং কারণদেহ। এই তিনটি দেহের ভিতরে বাস করে আত্মা। 

অতীন্দ্রিয় জগতে আত্মাদের জন্য আছে সাতটি ‘লোক’ – ভুলোক, ভুবঃলোক,স্বঃলোক, তপোলোক, জনঃলোক, মহঃলোক এবং হিরণ্যলোক। এর মধ্যে ভুলোক হ’ল পৃথিবীর মাটির ঠিক উপরের স্তর। যারা জীবনভর কামনা-বাসনার পার্থিব বন্ধনে কাটিয়ে পৃথিবী থেকে শুধু পাপই অর্জন ক’রেছে তাঁরা মৃত্যুর পর এই ভুলোকেই ঘুরে বেড়ায় অতৃপ্ত অবস্থায়। এদেরই বলা হয় প্রেত। এদের উপরের স্তর হ’ল ভুবঃলোক।ভুবঃলোকের নিম্নস্তরে র’য়েছে নরক বা শোধনাগার – যেখানে ভুলোকের আত্মাদের থেকে সামান্য উন্নত আত্মাদের (যাদের সঞ্চয়ে পাপের সাথে সাথে কিছু পুণ্যও আছে) বিভিন্ন শাস্তির মাধ্যমে পাপস্থালন হয়। তবে যারা পৃথিবীতে করে যাওয়া সাধনা তথা পুণ্যকর্মের মাধ্যমে এই প্রথম দুটি লোক পেরিয়ে যায় তারা চিরতরে জন্ম-মৃত্যুর আবর্ত থেকে লাভ করে মহামুক্তি। এরপর অতীন্দ্রিয় জগতে চলতে থাকে তাদের সাধনা এবং সাধনার মাধ্যমে ক্রমশঃ ঊর্দ্ধলোকে তাদের গতি হ’তে থাকে। এই জগতে প্রতিটি কর্মের জন্য নির্দিষ্ট ‘লোক’ আছে। যেমন তপস্বীদের জন্য তপোলোক, জ্ঞানীদের জন্য জনঃলোক, ভক্তদের জন্য মহঃলোক। এই প্রতিটি ‘লোক’ –এই আছে অসংখ্য স্তর –নানা ভাবের পুণ্যাত্মাদের জন্য। এই সব ‘লোক’ –এর উপরে রয়েছে হিরণ্যলোক।

ইন্দ্রিয়ের জগতের সাথে অতীন্দ্রিয় জগতের র’য়েছে অচ্ছেদ্য যোগসূত্র। ইন্দ্রিয়ের জগৎ থেকে যেমন প্ল্যানচেট, সিয়ান্স-চক্র বা যোগসাধনার মাধ্যমে নানাভাবে অতীন্দ্রিয় জগতের অধিবাসীদের সাথে সংযোগ স্থাপন করা হয় তেমনই অতীন্দ্রিয় জগতের আত্মারাও নানা কারণে নেমে আসেন ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য জগতের অধিবাসীদের কাছে – কখনো সূক্ষ্মদেহে, কখনো বা নিজের প্রবল ইচ্ছাশক্তির প্রভাবে পৃথিবীর আবহমণ্ডল থেকে একটোপ্লাজম সংগ্রহ করে সাময়িকভাবে স্থুলদেহ ধারণের মাধ্যমে। আজ পর্যন্ত দেশে-বিদেশে এমন অভিজ্ঞতা বহু মানুষের জীবনেই ঘটেছে। এর মধ্যে স্বামী অভেদানন্দ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুদিন কুমার মিত্র প্রভৃতিদের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কিন্তু আমার এই গ্রন্থে আমি শুধু সেইসব অপ্রকাশিত অতীন্দ্রিয় ঘটানাই অন্তর্ভুক্ত ক’রেছি যা আমার একান্ত আপন প্রিয়জনদের এবং আমার ব্যক্তিগত জীবনে ঘটেছে। মূলতঃ ১৯৯৬ সালে মান্ডুর জাহাজমহলে বেড়াতে গিয়ে আমার যে অতীন্দ্রিয় অভিজ্ঞতা ঘটেছিল সেই ঘটনাটিকেই প্রেক্ষাপট ক’রে আমার প্রিয়জনদের তথা আমার জীবনে ঘটে যাওয়া অন্যান্য অভিজ্ঞতাগুলির বিবরণ দিয়েছি আমি। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাদুটি ছাড়া বাকি অভিজ্ঞতাগুলি আমাকে সবিশদভাবে খুলে বলার জন্য আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ আমার বাবা শ্রীবিপুলকুমার গঙ্গোপাধ্যায়, আমার মা শ্রীমতি মীরা গঙ্গোপাধ্যায়, আমার দিদিমা শ্রীমতি আশারানী মুখোপাধ্যায় এবং আমার মধ্যপ্রদেশের সফরসঙ্গী ডঃ সুবিনয় দাশের কাছে।

এর মধ্যে প্রথম অভিজ্ঞতাটি হ’ল বাবার পাঁচ খণ্ডব্যাপী ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’ রচনার নেপথ্যকাহিনী যার কিছুটা ইঙ্গিত রহস্যের মোড়কে দেয়া আছে ওই মহাগ্রন্থের প্রথম খণ্ডের ভূমিকায়। কিন্তু অমানিশার মহাযোগে বাবার ওই অপার্থিব মহাভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার বিশদ বিবরণ এই গ্রন্থেই সর্বপ্রথম প্রকাশ লাভ করল। এই ঘটনাটি ছাড়াও বাবার আরো দুটি অতীন্দ্রিয় অভিজ্ঞতা প্রকাশিত হ’য়েছে এই গ্রন্থে। ক্রিয়াযোগের মাধ্যমে নিজের স্থুলদেহ ছেড়ে জ্যোতির্ময় দেহ ধারন করে অমৃতলোক থেকে তাঁর মাকে নিজদেহে নিয়ে আসার অভিজ্ঞতা এবং হিলির সীমান্তের কাছে বিদেহী আত্মা যোগেশ্চন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে সাক্ষাৎ করার অভিজ্ঞতা। এছাড়াও আমার দিদিমার মায়ের মৃত্যুর পর সন্তানের আকর্ষণে বারবার পৃথিবীতে ফিরে আসার কাহিনীও এই গ্রন্থের সত্যঘটনার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হ’য়েছে। সেই সাথে ম্যাডাম ক্যাথারিনের সিয়ান্স-চক্রে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের আত্মার সাথে ডঃ সুবিনয় দাশের সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা এবং গ্যাংটকের কাছে অন্ধকার বনপথে বিদেহী মিলিটারী অফিসার হরভজন সিং- এর মাধ্যমে আমাদের নিশ্চিত বিপদ থেকে উদ্ধারলাভের অভিজ্ঞতাও এই গ্রন্থটিকে সমৃদ্ধ করেছে। এই প্রতিটি অভিজ্ঞতার মাধ্যমে বিদেহী আত্মাদের সৌজন্যে পরলোক সম্বন্ধে যে তথ্য আমরা জানতে পেরেছি সেসবই গ্রন্থাকারে এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আমি। আশা করি – এই অপুর্ব অভিজ্ঞতাগুলি আমার সহৃদয় পাঠক-পাঠিকাদের অশেষ তৃপ্তি যোগাবে। 


Puntuacions i ressenyes

4,4
12 ressenyes

Sobre l'autor

তারাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা অধ্যাত্ম সাহিত্যের এই উজ্জ্বল নক্ষত্র ছেলেবেলা থেকেই আধ্যাত্মিক জগতের সাথে যুক্ত। সেই সময় থেকেই সাধক পিতা শ্রীবিপুল কুমার গঙ্গোপাধ্যায়, গোপাল সাধিকা মাতা শ্রীমতি মীরা গঙ্গোপাধ্যায় এবং অগণিত সিদ্ধ সাধক সাধিকার অমৃতময় সান্নিধ্য তাঁর মননশীল জগৎকে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করে তোলে। মাত্র চোদ্দ বছর বয়সে মহামণ্ডলেশ্বর শিবানন্দ গিরি মহারাজের পত্রিকা “পাঁচ সিকে পাঁচ আনা”-য় লেখকের প্রথম ধারাবাহিক ভ্রমণ কাহিনী “দিব্যধাম পুরীতে রথযাত্রা” প্রকাশিত হয়ে বিশেষ সম্মান লাভ করে।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজী সাহিত্যে মাস্টার ডিগ্রি অর্জনকারী এই সাধক লেখক যোগ ও ভক্তির পথে নিজ মুক্তির সাথে সাথে সকল ভক্তদেরও পরমের পথে নিয়ে যাবার লক্ষ্যে নিয়োজিত। এই মানবকল্যাণের ব্রতে তাঁর ঐশীকৃপাসম্পন্ন লেখনীই মুখ্য মাধ্যম। ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম গ্রন্থ “মহাসিন্ধুর ওপার থেকে”। তারপর থেকে প্রকাশিত হতে থাকে তাঁর একের পর এক আধ্যাত্মিক মহাগ্রন্থ- দেবলোকের অমৃতসন্ধানে (চার পর্বে সমাপ্ত – যমুনোত্রী-গঙ্গোত্রী-গোমুখ পর্ব, বাসুকীতাল-কালিন্দী খাল-বদ্রীনাথ পর্ব, পঞ্চবদ্রী-পঞ্চপ্রয়াগ-পঞ্চকেদার পর্ব, নেপাল পর্ব), অতীন্দ্রিয় জগতের আহ্বান, বৃন্দাবনে আজো ঘটে অঘটন, জ্ঞানগঞ্জের অমৃতলোকে, কাশীধামে আজো ঘটে অঘটন, শ্যামের মোহন বাঁশী, ক্ষণিক খোঁজে চিরন্তন ( তিন পর্বে সমাপ্ত- মধ্যপ্রদেশ পর্ব, নাসিক-শিরডি-দ্বারকা প্রভাস পর্ব, দক্ষিণ ভারত পর্ব), আজো লীলা করেন সাই, FROM THE WORLD BEYOND DEATH, জন্মান্তর, মহাপ্রভুর নীলাচলে আজো চলে লীলা, অনন্তের জিজ্ঞাসা (৪ খণ্ডে সমাপ্ত), কেদারনাথে আজো ঘটে অঘটন, যেথা রামধনু ওঠে হেসে, আজো সেথা নিত্য লীলা করেন গোরা রায়, জীবন থেকে মহাজীবনের পথে, সাংগ্রীলার গুপ্তযোগী, ব্রজধামে আজো ঘটে অলৌকিক ( তিন পর্বে সমাপ্ত – বৃন্দাবন পর্ব, মথুরা-রাধাকুণ্ড- গোবর্দ্ধন-কাম্যবন পর্ব এবং বর্ষাণা-নন্দগ্রাম-গোকুল মহাবন পর্ব) এবং ভক্তের ভগবান। প্রতিটি গ্রন্থই সাধুসমাজ, পাঠকসমাজ তথা বিভিন্ন সংবাদপত্র ও পত্রপত্রিকা কর্তৃক বিরাট সমাদর লাভ করে। এই গ্রন্থগুলিতে আজো নিত্য ঘটমান অলৌকিক লীলার উপর রচিত অবিস্মরণীয় সত্যঘটনাগুলি লেখককে যেমন আপামর জনসাধারণের আরো কাছে নিয়ে এসেছে তেমনই পাঠক-পাঠিকাদেরও অবিরত সাহায্য করে চলেছে তাঁদের আত্মোপলব্ধির পথে – জীবন থেকে মহাজীবনে উত্তরণের লক্ষ্যে। এইভাবেই লেখক বর্তমানে জগৎ ও জীবের কল্যাণে আপন ঐশীনির্দিষ্ট ব্রতে একান্তভাবে নিয়োজিত। 


Puntua aquest llibre electrònic

Dona'ns la teva opinió.

Informació de lectura

Telèfons intel·ligents i tauletes
Instal·la l'aplicació Google Play Llibres per a Android i per a iPad i iPhone. Aquesta aplicació se sincronitza automàticament amb el compte i et permet llegir llibres en línia o sense connexió a qualsevol lloc.
Ordinadors portàtils i ordinadors de taula
Pots escoltar els audiollibres que has comprat a Google Play amb el navegador web de l'ordinador.
Lectors de llibres electrònics i altres dispositius
Per llegir en dispositius de tinta electrònica, com ara lectors de llibres electrònics Kobo, hauràs de baixar un fitxer i transferir-lo al dispositiu. Segueix les instruccions detallades del Centre d'ajuda per transferir els fitxers a lectors de llibres electrònics compatibles.