প্রথমেই বলি ‘বাংলারখিস্তুকবাহিনী’ প্রকাশিত শারদীয় পূজাসংখ্যা ‘ঘরের লোক’ আপনাদের হাতে তুলে দিতে পেরে আমরা গর্বিত। গতবছর থেকেই এটা ছিল আমাদের আদি ও অকৃত্রিম স্বপ্ন, হ্যাঁ, আমরাসেই পরিবারের পক্ষ থেকে আপনাদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছি, যাদের শুধুমাত্র এই নামটা নিয়েই ভদ্রলোকের বেশধারী তথাকথিত সুশীল সমাজের একশ্রেণীর মানুষ ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ করে গেছে একটাসময়। আমরা সেই ‘বাংলারখিস্তুকবাহিনী’র শারদীয়া পত্রিকা আপনাদের হাতে তুলেদিতে এসেছি যেখানে লেখক তালিকায় একদিকে যেমন বহু প্রবীন লেখক লেখিকার লেখা আপনাদের মনরঞ্জন করবে, ঠিক তেমনই তরুন প্রতিভাশালী বলিষ্ঠ লেখনীরাও আদায় করে নেবে সমাদর ও কূর্ণিশ। বন্ধুরা, এটা আদতে আমাদের কাছে কোন পত্রিকা নয়, বরং বলতে পারেন, আমাদের মহান ‘খিস্তুক’ পরিবারের চোয়ালচাপা জেদ ও একদল তরুণের রক্তজল করা প্রায়াসের ফসল। তাই সবার পূর্বে আমরা এই সাফল্যের জন্য সাধুবাদ জানাতে চাই সেইসকল সমালোচক বন্ধুকে, যাঁদের বিদ্রুপ দিনেদিনে সাহায্য করেছে আমাদের এগিয়ে চলতে। আমাদের বাহিনী জানতো এই কাজে তারা একদিন ঠিক সফল হবে, কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির হাতে মারখাওয়া ইহুদিরাযদি তাদের স্বপ্নের একটাদেশ গড়েতুলতে পারে, (ইজরায়েল) তাহলে আমরাও পারি সুন্দর একখানি শারদীয়া পুস্তিকা আপনাদের হাতে তুলেদিতে। এবার ধন্যবাদ জানাতে চাই সেইসকল দিকপাল লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিকদেরকে, যাঁরা এক অনুরোধেই আমাদের হাতে তাঁদের মূল্যবান লেখা তুলে দিয়ে ‘ঘরেরলোক’কে সমৃদ্ধ করেছেন। ‘ঘরেরলোক” হ্যাঁ, প্রকৃতঅর্থে তাই। আমরা লেখক, লেখিকার, পাঠক/পাঠিকার প্রকৃতই ঘরেরলোক হয়ে উঠতে চাই আগামী দিনে, হলফ করে বলতে পারি, আমাদের শারদীয়া পত্রিকাটির পাতায় চোখ বুলিয়ে পাঠককুল সেখানে অপরিসীম এক বৈচিত্রের স্বাদপাবেন, খুঁজে নিতেপারবেন ‘আমার আমি’ কে, যে আমিত্ব বহু দুর্যোগের মধ্যেও তার সত্ত্বাকে বিসর্জন দেয়না। যেই আমিত্ব নিয়ে গর্ব‘আমারই চেতনার রঙে পান্না হল সবুজ, চুনি উঠল রাঙা হয়ে।আমি চোখ মেললুম আকাশে, জ্বলে উঠল আলো পুবে পশ্চিমে।
গোলাপের দিকে চেয়ে বললুম “সুন্দর”, সুন্দর হল সে।’বন্ধুরা, হয়তো গত বছরই আমরা পারতাম এই শারদীয়া পত্রিকাটি আপনাদের হাতে তুলে দিতে, কিন্তু ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির কারণে আমরা পেরে উঠিনি। তারমাঝেই আমরা হারিয়েছি কয়েকজন ঘনিষ্ঠ শুভাকাঙ্খীকে, যাঁদেরমধ্যে বুলবুলসিং, প্রদীপহাজরার অভাব পূরণ হবার নয়। আমরা এই স্বপ্ন পূরণের দিনে তাঁদের আত্মার প্রতি আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। পরিশেষে আমরা বলব, আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আরও বহু সদস্য তাঁদের লেখা আমাদের হাতে তুলেদিয়েছিলেন, যেগুলোকেস্থানাভাবের কারণে আমরা এবারেরমতো স্থান দিতে পারলামনা, সেজন্য আমরা দুঃখিত। তবে আমাদের বিশ্বাস আগামীদিনে নিশ্চয় তাঁদের লেখায় আমাদের ঘরেরলোক সমৃদ্ধহবে। ভবিষ্যতে ঠিক এভাবেই নবীন ও প্রবীন সাহিত্যিকমণ্ডলীর ছোঁয়ায় আরও সুস্ফীত কলেবরে আমরা ফিরে আসতে চলেছি আপনাদের কাছে শিউলি ছোপানো প্রভাত, কাশফুল আর প্রস্ফুটিত শতদলকে সাক্ষীরেখে। সহসম্পাদক মণ্ডলীর আমার পরম স্নেহের ভগিনী সমা দীপা ব্যানার্জি এবং ভাতৃসম ডক্টর সামিম আহমেদ যেভাবে এই পরিকল্পনাটিকে সাফল্যমন্ডিত করেছে, তাতে আগামী দিনে আরও কঠিন দায়িত্ব তাদের স্কন্দে আমরা অর্পণ করতে চাই। কারণ আমরা জানি ‘বাংলারখিস্তুকবাহিনী’র পতাকা বহন করার ক্ষমতা তাদের সহজাত। আমরা শুভেচ্ছা জানাই সৃস্টি পাবলিকেশন এর কর্ণধার অনির্বাণ ব্যানার্জিকে, যিনি বাংলারখিস্তুকবাহিনীর প্রতি আস্থা রেখে আমাদের এই পরিকল্পনাটিকে বাস্তবায়িত করেছেন। আমরা অর্ক, সোমা, রুমিঙ্গিতা, বিভাসদা, অপর্ণা, সিল্কি, ধৃতিমান, পূজা, সৌম্যদীপ, প্রবালদা, মৌসুমীদি এবং আমাদের মহান খিস্তুক পরিবারের আরও অগুনতি সদস্যদের প্রতি দায়বদ্ধ, যাঁদেরপ্রেরণা ও তাগিদের মিলিত ফসল আমাদের এই পত্রিকা। সেই সাথে আরও একজন ব্যক্তির কথা স্মরণ না করলেই নয়, ‘ওই যেপ্রবীণ, ওইযে পরম পাকা / চক্ষু-কর্ণ দুইটি ডানায় ঢাকা / ঝিমায় যেন চিত্রপটে আঁকা অন্ধকারে বন্ধ করা খাঁচায়।’ হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন আপনারা, আমি বিনম্র চিত্তে একলব্য হয়ে আমাদের সেই গুরুদেব দিপ্তেন্দুঘোষকে সর্বদা স্মরণ করতে চাই। তুমি না থাকলে কে আমাদের প্রেরণা হয়ে সর্বদা আমাদের লেখক সত্তাটাকে আলোর সামনে মেলে ধরে নিজে রয়ে যেত অন্ধকারে? তুমি না থাকলে কে বোঝাত, সাহিত্য জগতে যাঁদের তুমি শত্রু ভাবছো, সেই সকল ব্যক্তির শত্রুতাটাকে না দেখে তাদের যোগ্যতা টাকে দেখার চেষ্টাকর। তাই সেই সকল পণ্ডিত প্রবরকে আমি বলব, আপনারা যদি সাহিত্যকে সত্যি ভালোবেসে থাকেন, তাহলে আসুননা, আগামী দিনে আপনাদের লেখায় আরও প্রস্ফুটিত হোক আমাদের ‘ঘরেরলোক’। ‘আমরা চলি সমুখ পানে, কে আমাদের বাঁধবে। রইল যারা পিছুর টানে কাঁদবে তারা কাঁদবে।’ এটা কোন হুমকি নয়, নয় কোনো দম্ভোক্তি, কবিগুরুর এই কথাগুলো বাস্তবিক আমাদের আত্মবিশ্বাসের নামান্তর, জয় খিস্তুক।
BANGLAR KHISTUK BAHINIR SHARADIA PATRIKA